MCQ practice | Free learning platform

Categories

Posted on 23 Mar, 2022 09:17 am, category: Islam | Education | Al-Hadis |

সূরাতুল-ফাতিহার বিষয়বস্তু

 মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণনা করেছেন যে,  আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন- নামাজ (অর্থাৎ, সুরাতুল ফাতিহা) আমার এবং আমার বান্দাদের মধ্যে দু‘ভাগে বিভক্ত।

অর্ধেক আমার জন্য আর অর্ধেক আমার বান্দাদের জন্য। আমার বান্দাগণ যা চায়, তা তাদেরকে দেয়া হবে। অতঃপর রসূল (সাঃ) বলেছেন যে, যখন বান্দাগণ বলে  তখন আল্লাহ বলেন যে, আমার বান্দাগণ আমার প্রশংসা করছে। আর যখন বলে   তখন তিনি বলেন যে, তারা আমার মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করছে। আর যখন বলে   তখন তিনি বলেন, এ আয়াতটি আমার এবং আমার বান্দাগণের মধ্যে সংযুক্ত। কেননা, এর এক অংশে আমার প্রশংসা এবং অপর অংশে বান্দাগণের দোয়া ও আরয রয়েছে। এ সঙ্গে এ কথাও বলা হয়েছে যে, বান্দাগণ যা চাইবে তারা তা পাবে।

অতঃপর বান্দাগণ যখন বলে  (শেষ পর্যন্ত) তখন আল্লাহ বলেন, এসবই আমার বান্দাগণের জন্য এবং তারা যা চাইবে তা পাবে।- (মাযহারী)

 (সকল প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার)। অর্থাৎ, দুনিয়াতে যে কোন স্থানে যে কোন বস্তুর প্রশংসা করা হয়, বাস্তবে তা আল্লাহরই প্রশংসা। কেননা, এ বিশ্ব চরাচরে অসংখ্য মনােরম দৃশ্যাবলী, অসংখ্য মনােমুগকর সৃষ্টিরাজি আর সীমাহীন উপকারী বস্তুসমূহ সর্বদাই মানব মনকে আল্লাহ তাআলার প্রতি আকৃষ্ট করতে থাকে এবং তাঁর প্রশংসায় উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে, সকল বস্তুর অন্তরালেই এক অদৃশ্য সত্তার নিপুণ হাত সদা সক্রিয়।

যখন পৃথিবীর কোথাও কোন বস্তুর প্রশংসা করা হয়, তখন প্রকৃতপক্ষে তা উক্ত বস্তুর সৃষ্টিকর্তার প্রতিই বর্তায়। যেমন, কোন চিত্র, কোন ছবি বা নির্মিত বস্তুর প্রশংসা করা হলে প্রকৃতপক্ষে সে প্রশংসা প্রস্তুতকারকেরই করা হয়।

এ ব্যাক্যটি প্রকৃতপক্ষে মানুষের সামনে বাস্তবতার একটি নতুন দ্বার উন্মুক্ত করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের সামনে যা কিছু রয়েছে এ সব কিছুই একটি একক সত্তার সাথে জড়িত এবং সকল প্রশংসাই সে অনন্ত অসীম শক্তির। এসব দেখে কারাে অন্তরে যদি প্রশংসাবাণীর উদ্রেক হয় এবং মনে করে যে, তা অন্য কারাে প্রাপ্য, তবে এ ধারণা জ্ঞান-বুদ্ধির সংকীর্ণতারই পরিচায়ক। সুতরাং নিঃসন্দেহে একথাই বলতে হয় যে,   যদিও প্রশংসার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে অতি সুক্ষতার সাথে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সকল সৃষ্টবস্তুর উপাসনাই নিষিদ্ধ করা হলাে। তাছাড়া এ দ্বারা অত্যন্ত আকর্ষণীয় পদ্ধতিতে একত্ববাদের শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। আল-কোরআনেরে এ ক্ষুদ্র বাক্যটিতে একদিকে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করা হয়েছে এবং অপরদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নিমগ্ন মানৰ মনকে এক অতিবাস্তবের দিকে আকৃষ্ট করত: যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর পূজা-অর্চনাকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতদসঙ্গে অতি হেকমতের সাথে বা অকাট্যভাবে ঈমানের সর্বপ্রথম স্তম্ভ ‘তওহীদ‘ বা একত্ববাদের পরিপূর্ণ নকশাও তুলে ধরা হয়েছে। একটু চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, বাক্যটিতে যে দাবী করা হয়েছে, সে দাবীর স্বপক্ষে  দলীলও দেয়া হয়েছে।

 এ ক্ষুদ্র বাক্যটির পরেই আল্লাহ তা`আলার প্রথম গুণবাচক নাম `রাব্বুল আলামীন’ -এর উল্লেখ করা হয়েছে। আরবী ভাষায়   রব্   শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পালনকর্তা। লালন-পালন বলতে বুঝায়, কোন বস্তুকে তার সমস্ত মঙ্গলামঙ্গলের প্রতি লক্ষ্য রেখে ধীরে ধীরে বা পর্যায়ক্রমে সামনে এগিয়ে নিয়ে উন্নতির চরম শিখরে পৌছে দেয়া।

    এ শব্দটি একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। সম্বন্ধপদ রূপে অন্যের জন্যেও ব্যবহার করা চলে, সাধারণভাবে নয়। কেননা, প্রত্যেকটি প্রাণী বা সৃষ্টিই প্রতিপালিত হওয়ার মুখাপেক্ষী, তাই সে অন্যের প্রকৃত প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে পারে না।।

     এ শব্দটি    শব্দের বহুবচন। এতে পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টিই অন্তর্ভুক্ত। যথা- আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য, তারক-নক্ষত্ররাজি, বিজলী, বৃষ্টি, ফেরেশতাকুল, জ্বিন, জমীন এবং এতে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে। জীবজন্তু, মানুষ, উদ্ভিদ, জড়পদার্থ সব কিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। অতএব  এর অর্থ হচ্ছে— আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত সৃষ্টির পালনকর্তা। তাছাড়া একথাও চিন্তার উর্ধ্বে নয় যে, আমরা যে দুনিয়াতে বসবাস করছি এর মধ্যেও কোটি কোটি সৃষ্টবন্তু রয়েছে। এ সৃষ্টিগুলাের মধ্যে যা কিছু আমাদের দৃষ্টিগােচর হয় এবং যা আমরা দেখি না সে সবগুলােই এক একটা আলম বা জগত।

তাছাড়া আরাে কোটি কোটি সৃষ্টি রয়েছে, যা সৌরজগতের বাইরে, যা আমরা অবলােকন করতে পারি না। ইমাম রাযী তফসীরে-কবীরে লিখেছেন যে, এ সৌরজগতের বাইরে আরাে সীমাহীন জগত রয়েছে। যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত এবং একথা সর্বজনবিদিত যে, সকল বস্তুই আল্লাহর ক্ষমতার অধীন। সুতরাং তাঁর জন্য সৌরজগতের অনুরূপ আরাে সীমাহীন কতকগুলাে জগত সৃষ্টি করে রাখা অসম্ভব মােটেই নয়।

উপরােক্ত আলােচনা দ্বারা পরিষ্কারভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, |  — এর নিখুঁত প্রতিপালন নীতিই পূর্বের বাক্য  -এর দলীল বা প্রমাণ। সমগ্র সৃষ্টির লালন-পালনের দায়িত্ব একই পৰিত্ৰ সত্তার ; তাই তারিফ প্রশংসারও প্ৰকত প্রাপক তিনিই অন্য কেউ নয়। এজন্য প্রথম আয়াত  -এ তারীফ-প্রশংসার সাথে ঈমানের প্রথম স্তম্ভ আল্লাহ তা'আলার একত্ব বা তওহীদের কথা অতি সূক্ষ্মভাবে এসে গেছে।

      দ্বিতীয় আয়াতে তাঁর গুণ, দয়ার প্রসঙ্গ  শব্দদ্বয়ের দ্বারা বর্ণনা করেছেন। উভয় শব্দই ‘গুণের আধিক্যবােধক বিশেষণ‘ যাতে আল্লাহর দয়ার অসাধারণত্ব ও পূর্ণতার কথা বুঝায়। এ স্থলে এ গুণের উল্লেখ সম্ভবতঃ এজন্য যে, আল্লাহ তা'আলা যে সমগ্র সষ্টিজগতের লালন-পালন ভরণ-পােষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং গ্রহন করেছেন এতে তাঁর নিজস্ব কোন প্রয়োজন নেই বা অন্যের দ্বারা প্ৰভাবান্বিত হয়েও নয়; বরং তাঁর রহমত বা দয়ার তাগিদেই করেছেন। যদি সমস্ত ‍সৃষ্টির অস্তিত্ব না থাকে, তাতেও তার কোন লাভ-ক্ষতি নেই।

      -এর অর্থ কোন বস্তুর উপর এমন অধিকার থাকা, যাকে ব্যবহার, রদবদল, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সব কিছু করার সকল অধিকার থাকবে।  অর্থ প্রতিদান দেয়া।  এর শাব্দিক অর্থ প্রতিদান-দিবসের মালিক বা অধিপতি। অর্থাৎ, প্রতিদান - দিবসের অধিকার ও আধিপত্য কোন্ বস্তুর উপরে হবে, তার কোন বর্ণনা দেয়া হয়নি। তফসীরে কাশশাফে বলা হয়েছে যে, এতে ‘আম’ বা অর্থের ব্যাপকতার প্রতি ইশারা করা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিদান দিবসে সকল সৃষ্টিরাজি ও সকল বিষয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার অধিকারে থাকবে।

 

Reference book:


Copy Link to Share:
https://www.mcqpractice.com/auth/index.php?page=../proverbs/article-details.php&id=80&t=সূরাতুল-ফাতিহার-বিষয়বস্তু

Posted on 23 Mar, 2022 09:17 am, Category:

সূরাতুল-ফাতিহার বিষয়বস্তু

 মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণনা করেছেন যে,  আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন- নামাজ (অর্থাৎ, সুরাতুল ফাতিহা) আমার এবং আমার বান্দাদের মধ্যে দু‘ভাগে বিভক্ত।

অর্ধেক আমার জন্য আর অর্ধেক আমার বান্দাদের জন্য। আমার বান্দাগণ যা চায়, তা তাদেরকে দেয়া হবে। অতঃপর রসূল (সাঃ) বলেছেন যে, যখন বান্দাগণ বলে  তখন আল্লাহ বলেন যে, আমার বান্দাগণ আমার প্রশংসা করছে। আর যখন বলে   তখন তিনি বলেন যে, তারা আমার মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করছে। আর যখন বলে   তখন তিনি বলেন, এ আয়াতটি আমার এবং আমার বান্দাগণের মধ্যে সংযুক্ত। কেননা, এর এক অংশে আমার প্রশংসা এবং অপর অংশে বান্দাগণের দোয়া ও আরয রয়েছে। এ সঙ্গে এ কথাও বলা হয়েছে যে, বান্দাগণ যা চাইবে তারা তা পাবে।

অতঃপর বান্দাগণ যখন বলে  (শেষ পর্যন্ত) তখন আল্লাহ বলেন, এসবই আমার বান্দাগণের জন্য এবং তারা যা চাইবে তা পাবে।- (মাযহারী)

 (সকল প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার)। অর্থাৎ, দুনিয়াতে যে কোন স্থানে যে কোন বস্তুর প্রশংসা করা হয়, বাস্তবে তা আল্লাহরই প্রশংসা। কেননা, এ বিশ্ব চরাচরে অসংখ্য মনােরম দৃশ্যাবলী, অসংখ্য মনােমুগকর সৃষ্টিরাজি আর সীমাহীন উপকারী বস্তুসমূহ সর্বদাই মানব মনকে আল্লাহ তাআলার প্রতি আকৃষ্ট করতে থাকে এবং তাঁর প্রশংসায় উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে, সকল বস্তুর অন্তরালেই এক অদৃশ্য সত্তার নিপুণ হাত সদা সক্রিয়।

যখন পৃথিবীর কোথাও কোন বস্তুর প্রশংসা করা হয়, তখন প্রকৃতপক্ষে তা উক্ত বস্তুর সৃষ্টিকর্তার প্রতিই বর্তায়। যেমন, কোন চিত্র, কোন ছবি বা নির্মিত বস্তুর প্রশংসা করা হলে প্রকৃতপক্ষে সে প্রশংসা প্রস্তুতকারকেরই করা হয়।

এ ব্যাক্যটি প্রকৃতপক্ষে মানুষের সামনে বাস্তবতার একটি নতুন দ্বার উন্মুক্ত করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের সামনে যা কিছু রয়েছে এ সব কিছুই একটি একক সত্তার সাথে জড়িত এবং সকল প্রশংসাই সে অনন্ত অসীম শক্তির। এসব দেখে কারাে অন্তরে যদি প্রশংসাবাণীর উদ্রেক হয় এবং মনে করে যে, তা অন্য কারাে প্রাপ্য, তবে এ ধারণা জ্ঞান-বুদ্ধির সংকীর্ণতারই পরিচায়ক। সুতরাং নিঃসন্দেহে একথাই বলতে হয় যে,   যদিও প্রশংসার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে অতি সুক্ষতার সাথে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সকল সৃষ্টবস্তুর উপাসনাই নিষিদ্ধ করা হলাে। তাছাড়া এ দ্বারা অত্যন্ত আকর্ষণীয় পদ্ধতিতে একত্ববাদের শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। আল-কোরআনেরে এ ক্ষুদ্র বাক্যটিতে একদিকে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করা হয়েছে এবং অপরদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নিমগ্ন মানৰ মনকে এক অতিবাস্তবের দিকে আকৃষ্ট করত: যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর পূজা-অর্চনাকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতদসঙ্গে অতি হেকমতের সাথে বা অকাট্যভাবে ঈমানের সর্বপ্রথম স্তম্ভ ‘তওহীদ‘ বা একত্ববাদের পরিপূর্ণ নকশাও তুলে ধরা হয়েছে। একটু চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, বাক্যটিতে যে দাবী করা হয়েছে, সে দাবীর স্বপক্ষে  দলীলও দেয়া হয়েছে।

 এ ক্ষুদ্র বাক্যটির পরেই আল্লাহ তা`আলার প্রথম গুণবাচক নাম `রাব্বুল আলামীন’ -এর উল্লেখ করা হয়েছে। আরবী ভাষায়   রব্   শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পালনকর্তা। লালন-পালন বলতে বুঝায়, কোন বস্তুকে তার সমস্ত মঙ্গলামঙ্গলের প্রতি লক্ষ্য রেখে ধীরে ধীরে বা পর্যায়ক্রমে সামনে এগিয়ে নিয়ে উন্নতির চরম শিখরে পৌছে দেয়া।

    এ শব্দটি একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। সম্বন্ধপদ রূপে অন্যের জন্যেও ব্যবহার করা চলে, সাধারণভাবে নয়। কেননা, প্রত্যেকটি প্রাণী বা সৃষ্টিই প্রতিপালিত হওয়ার মুখাপেক্ষী, তাই সে অন্যের প্রকৃত প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে পারে না।।

     এ শব্দটি    শব্দের বহুবচন। এতে পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টিই অন্তর্ভুক্ত। যথা- আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য, তারক-নক্ষত্ররাজি, বিজলী, বৃষ্টি, ফেরেশতাকুল, জ্বিন, জমীন এবং এতে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে। জীবজন্তু, মানুষ, উদ্ভিদ, জড়পদার্থ সব কিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। অতএব  এর অর্থ হচ্ছে— আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত সৃষ্টির পালনকর্তা। তাছাড়া একথাও চিন্তার উর্ধ্বে নয় যে, আমরা যে দুনিয়াতে বসবাস করছি এর মধ্যেও কোটি কোটি সৃষ্টবন্তু রয়েছে। এ সৃষ্টিগুলাের মধ্যে যা কিছু আমাদের দৃষ্টিগােচর হয় এবং যা আমরা দেখি না সে সবগুলােই এক একটা আলম বা জগত।

তাছাড়া আরাে কোটি কোটি সৃষ্টি রয়েছে, যা সৌরজগতের বাইরে, যা আমরা অবলােকন করতে পারি না। ইমাম রাযী তফসীরে-কবীরে লিখেছেন যে, এ সৌরজগতের বাইরে আরাে সীমাহীন জগত রয়েছে। যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত এবং একথা সর্বজনবিদিত যে, সকল বস্তুই আল্লাহর ক্ষমতার অধীন। সুতরাং তাঁর জন্য সৌরজগতের অনুরূপ আরাে সীমাহীন কতকগুলাে জগত সৃষ্টি করে রাখা অসম্ভব মােটেই নয়।

উপরােক্ত আলােচনা দ্বারা পরিষ্কারভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, |  — এর নিখুঁত প্রতিপালন নীতিই পূর্বের বাক্য  -এর দলীল বা প্রমাণ। সমগ্র সৃষ্টির লালন-পালনের দায়িত্ব একই পৰিত্ৰ সত্তার ; তাই তারিফ প্রশংসারও প্ৰকত প্রাপক তিনিই অন্য কেউ নয়। এজন্য প্রথম আয়াত  -এ তারীফ-প্রশংসার সাথে ঈমানের প্রথম স্তম্ভ আল্লাহ তা'আলার একত্ব বা তওহীদের কথা অতি সূক্ষ্মভাবে এসে গেছে।

      দ্বিতীয় আয়াতে তাঁর গুণ, দয়ার প্রসঙ্গ  শব্দদ্বয়ের দ্বারা বর্ণনা করেছেন। উভয় শব্দই ‘গুণের আধিক্যবােধক বিশেষণ‘ যাতে আল্লাহর দয়ার অসাধারণত্ব ও পূর্ণতার কথা বুঝায়। এ স্থলে এ গুণের উল্লেখ সম্ভবতঃ এজন্য যে, আল্লাহ তা'আলা যে সমগ্র সষ্টিজগতের লালন-পালন ভরণ-পােষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং গ্রহন করেছেন এতে তাঁর নিজস্ব কোন প্রয়োজন নেই বা অন্যের দ্বারা প্ৰভাবান্বিত হয়েও নয়; বরং তাঁর রহমত বা দয়ার তাগিদেই করেছেন। যদি সমস্ত ‍সৃষ্টির অস্তিত্ব না থাকে, তাতেও তার কোন লাভ-ক্ষতি নেই।

      -এর অর্থ কোন বস্তুর উপর এমন অধিকার থাকা, যাকে ব্যবহার, রদবদল, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সব কিছু করার সকল অধিকার থাকবে।  অর্থ প্রতিদান দেয়া।  এর শাব্দিক অর্থ প্রতিদান-দিবসের মালিক বা অধিপতি। অর্থাৎ, প্রতিদান - দিবসের অধিকার ও আধিপত্য কোন্ বস্তুর উপরে হবে, তার কোন বর্ণনা দেয়া হয়নি। তফসীরে কাশশাফে বলা হয়েছে যে, এতে ‘আম’ বা অর্থের ব্যাপকতার প্রতি ইশারা করা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিদান দিবসে সকল সৃষ্টিরাজি ও সকল বিষয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার অধিকারে থাকবে।

 

Reference book:


More articles you may like







© 2018-2024 Privacy Policy  
        FAQ | Help | Contact